টেস্টের আগের দিন বাংলাদেশের অনুশীলন, অথচ নেই মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে, তিনি থাকবে না মাঠে ! বাংলাদেশ, টেস্ট ক্রিকেট আর মুশফিকুর রহিম, অবিচ্ছেদ্য এক সম্পর্কে পড়তে যাচ্ছে ক্ষণিকের ছেদ। সাড়ে ৯ বছর পর মুশফিককে ছাড়া টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
অনেক কিছুই বদলে গেছে এই সময়ে। সেই সময়ে অধিনায়ক ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে এখন যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ। তখন খেলছিলেন হাবিবুল বাশার, যিনি এখন নির্বাচক। তখন জাভেদ ওমর, মোহাম্মদ রফিকরা খেলতেন। টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তখনও স্বপ্ন দেখতেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেটি ছিল ২০০৭ সাল।
ঐই সময়ে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে যথারীতি উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন খালেদ মাসুদ। ততদিনে উইকেটের সামনে তার পারফরম্যান্স নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ওই সফরে প্রথম টেস্টে বাজে পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয় টেস্টে তাকে বাদ দেওয়া হলো । জায়গা পেলেন মুশফিক।
ততদিনে ২০০৫ ও ২০০৬ সালে দুটি টেস্ট খেলে ফেলেছেন মুশফিক। দুটিই ছিল ব্যাটসম্যান হিসেবে। মাসুদ বাদ পড়ায় সুযোগ পেলেন প্রথমবার কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার। কলম্বোর পি সারা ওভালে দ্বিতীয় ইনিংসে খেললেন ৮০ রানের দারুণ এক ইনিংস। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। মাসুদের ক্যারিয়ারের ইতি, মুশফিকের সূচনা।
সময়ে খেলেছেন বাংলাদেশের ৪৯ টেস্টের সবকটি। তার ফেরার সেই টেস্টের একাদশের একমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউ নেই এখনকার দলে। আততায়ী চোট থামাল তাকেও।
এই ৪৯ টেস্টের ৪৬ টিতেই মুশফিকের হাতে কিপিং গ্লাভস। অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও কিপিং ছাড়েননি তিনি। সবসময়ই বলে এসেছেন, ব্যাটিংয়ের মত কিপিংও তার আবেগ-ভালোবাসার জায়গা। ২০১৫ সালে আঙুলে চোট পেলে তিনটি টেস্টে কিপিং করেছিল লিটন দাস। মুশফিক খেলেছিলেন শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে। পরে ফিট হয়ে আবার নিজের করে নেন কিপিং গ্লাভস। নেতৃত্ব দিয়েছেন টানা ২৭টি টেস্টে।
টানা এই ৪৯ টেস্ট অনায়াসেই বাংলাদেশের রেকর্ড। ওয়ানডেতেও রেকর্ডটি মুশফিকেরই। এই সফরে ছেদ পড়েছে সেই ধারায়ও। সিরিজের প্রথম ওয়ানডের পর ছিটকে গেলেন হ্যামস্ট্রিংয়ের টানে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিককে ছাড়া খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ ২০১০ সাল থেকে টানা ৯২ ওয়ানডের পর!
বাংলাদেশ দলে এতটাই জুড়ে আছেন মুশফিক। ক্রাইস্টচার্চে নিশ্চিতভাবেই তার অভাব অনুভব করবে দল।
No comments:
Post a Comment